জীবনের শেষ আহাজারি—কে নেবে দায়?
নিঃশেষের আহাজারি
বুকের ব্যথা—
নাকি শুধুই এক গ্যাস্ট্রিকের যন্ত্রণা?
জীবন-মৃত্যুর দোলাচলে,
ভুল বোঝাবুঝি কত যে সর্বনাশা!
সময় থামে না,
কিন্তু সিদ্ধান্তহীনতার একেকটা ক্ষণ,
চাপা দিয়ে রাখে জীবনকে,
তখনো বুঝি আমরা, যখন আর কিছুই করার থাকে না!
(১) মান্না—এক নায়কের নীরব বিদায়
কত হাসি, কত আলো, কত স্বপ্নের ছবি,
রূপালি পর্দায় এক মহানায়ক,
কিন্তু জীবন কি শুধু কেবল অভিনয়?
প্রকৃত মঞ্চে যখন নামল আঁধার,
তখন কেউ কি তাকে দিতে পারল আশার হাত?
বুকের ব্যথা ছিল কি সামান্য?
তবু ভেবেছিলেন, “নাহ, এটা হয়তো গ্যাস্ট্রিক!”
ডাক্তার বলল, "দ্রুত পদক্ষেপ নাও,"
কিন্তু সময় গড়াল, সিদ্ধান্ত এল না,
আপনজন দূরে, মনে দ্বিধার দেয়াল,
চিকিৎসা হবে? কিন্তু কোথায়?
বিদেশ না কি দেশ? ওষুধ না কি অস্ত্রোপচার?
সময়ের ফাঁদে ধরা দিল জীবন!
তারপর?
একটি রাত, একটি মুহূর্ত,
হৃদয় থেমে গেল, পর্দা নামল,
নিরব হয়ে গেল এক উজ্জ্বল প্রদীপ!
অভিযোগ? মামলা? শোক?
তাতে কি ফিরবে হারিয়ে যাওয়া প্রাণ?
ফিরবে কি সেই হাসি, সেই স্বপ্ন?
নাকি শুধু থেকে যাবে
একটি নাম—
"নায়ক মান্না,"
যার গল্প থেমে গেল
একটি ভুল বোঝাবুঝির কারণে!
(২) তামিম—এক সেকেন্ডের খেলা
ক্রিজের রাজা,
হাজারো দর্শকের হৃদয়ে বাজে যার নাম,
তবু বুকের ব্যথা এল নিঃশব্দে,
সেও ভাবল, "গ্যাস্ট্রিক হবে!"
কিন্তু মৃত্যু কি শোনে কারো ভুল ভাবনা?
ওষুধ খেলো, ব্যথা কমল না,
হাসপাতালের পথে গেল,
ডাক্তার বলল, "সময় নেই, দ্রুত চলো!"
হেলিকপ্টার প্রস্তুত,
মাঠের পাশে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা,
মনে কী ছিল?
জীবন না কি শেষ মুহূর্তের এক অনিশ্চয়তা?
তবে জীবন চাইল না থামতে,
ডাক্তারদের হাত বাড়াল একদম সঠিক সময়ে,
সাহস, চিকিৎসা আর সিদ্ধান্তের শক্তিতে
ফিরে এলো সে!
বেঁচে থাকলো এক নতুন গল্পের নায়ক হয়ে!
কিন্তু যদি দেরি হতো?
যদি মান্নার মতো একটুখানি ভুল সিদ্ধান্ত
চিরদিনের জন্য নামিয়ে দিত পর্দা?
তখন?
তখনও কি আমরা বলতাম,
"গ্যাস্ট্রিক হবে!"
(৩) কক্সবাজারের নামহীন রোগী—নীরব আত্মত্যাগ
নিঃসঙ্গ এক বয়স্ক মানুষ,
যার হৃদয়ে বয়ে গেছে অস্ত্রোপচারের দাগ,
দু’বার রিং বসেছে, একবার হয়েছে ওপেন হার্ট সার্জারি,
তবু জীবন চেয়েছিল একটুখানি সময় আরও!
হাসপাতালের বিছানায়,
একটি হৃদয় থেমে যেতে চায়,
কিন্তু ডাক্তার সজীব কি তা হতে দেবে?
সে লড়ল, বুক চাপল, শ্বাস ফেরাতে চাইল,
সে জানত, সময় নেই,
জানত, হয়তো জিতবে না,
তবু সে লড়ল, কারণ এটাই তার পণ!
কিন্তু মানুষ?
তারা কি বোঝে এই আত্মত্যাগ?
রোগী বাঁচল না, আর তাই?
ডাক্তারকে তারা মারল!
রক্তাক্ত করল সেই হাত,
যে হাত ছিল জীবন ফেরানোর প্রতিজ্ঞায়!
তাহলে?
বাঁচানোর চেষ্টার মূল্য কি?
বেঁচে থাকার লড়াই কি শুধু একপাক্ষিক?
আমরা কি ডাক্তারকে দেব সেই সম্মান,
যে সম্মান সে পাওয়ার যোগ্য?
শেষ প্রশ্ন, শেষ আহ্বান
কালক্ষেপণ করো না,
গ্যাস্ট্রিক-ভেবে অবহেলা করো না,
যখন মৃত্যু দরজায় দাঁড়িয়ে,
তখন দ্বিধার সুযোগ কোথায়?
ডাক্তার যদি হাত বাড়ায়,
তাকে বাধা দিও না,
তার সিদ্ধান্তকেই মানো,
তার দিকেই চেয়ে থাকো,
কারণ জীবন শুধু একবারই আসে!
তবু যদি না বাঁচে,
তবে তাকেও দোষ দিও না,
বুক চাপ দিয়ে যদি জীবন বাঁচানো না যায়,
তবে তার চেষ্টাকে সম্মান দাও,
তাকে নিঃশেষ করো না,
তাকে ধ্বংস কোরো না!
জীবন এক অনিশ্চিত গল্প,
কিন্তু চিকিৎসকের হাতই
সেই গল্পকে নতুন পথ দিতে পারে!
Comments
Post a Comment