ডাক্তারি—স্বপ্ন না আত্মত্যাগ?


"ব্যস্ত?" — ছোট্ট এই প্রশ্নটা ফোনের ওপাশ থেকে ভেসে এলে গলার কাছে যেন কী একটা দলা বেঁধে যায়। কী বলব? বলার মতো অবসর কি আদৌ আছে? দিনের আলো নিভে গেলে অফিস ফুরোয় বটে, কিন্তু চিকিৎসকের দিন শেষ হয় না কখনো। ওয়ার্ডের বাইরে পা ফেললেও মাথায় ঘোরে সিলেবাস, সামনে ঝুলে থাকা একটার পর একটা পরীক্ষা।

ব্যক্তিগত জীবনের খাতা খুলে দেখলে অবাক হতে হয়—সেখানে যেন শূন্যতার পাতাগুলোই বেশি। উৎসব, অনুষ্ঠান, পারিবারিক আড্ডা—সবই রয়ে গেছে পেছনে, স্মৃতির কোনায়। ভ্রমণ তো বহু দূরের স্বপ্ন, রাস্তাগুলো যেন শুধুই হাসপাতাল আর বাসার মাঝেই ঘুরপাক খায়।

আমরা ডাক্তাররা কি রিজার্ভড? হয়তো হ্যাঁ। কিন্তু সেটা স্বভাবে নয়, সময়ের টানাপেড়নে গড়ে ওঠা এক আত্মরক্ষার প্রাচীর। কেউ জানে না, রাত গভীর হলে কেউ না কেউ কোন না কোন হাসপাতালে কোন জীবন বাঁচাতে ব্যস্ত। আমি হয়তো এখন লিখছি, কারণ আমার সহকর্মীরা এই মুহূর্তে কাউকে না কাউকে বাঁচাতে ছুটছেন।

তাই কাউকে আর আগের মতো উদ্দীপনায় বলি না, “ডাক্তারি পড়ো।” পেশাটা মহান, তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু এই মহানতাটার দাম চোকাতে হয় নিঃসঙ্গতা, আত্মত্যাগ, আর বিরামহীন ব্যস্ততার মাধ্যমে।

Comments

Popular posts from this blog

বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস ২০২৫: “জন্ম হোক সুরক্ষিত, ভবিষ্যৎ হোক আলোকিত”

RENAL STONE & ITS MODERN TREATMENT( কিডনীর পাথর ও তার আধুনিক চিকিৎসা )